নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ৮০ বছরের বৃদ্ধা সুফিয়া বিবি। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পাঁচ সন্তান থাকার পরও তিনি আজ নিঃসঙ্গ। কেউ তাকে আশ্রয় দেননি, খোঁজও নেন না। ভাঙাচোরা একটি কুঁড়ে ঘরই এখন তার শেষ ঠিকানা।
ইফতারের সময় ঘনিয়ে এলেও তিনি জানেন না, কী খাবেন। কখনো শুকনো রুটি, কখনো শুধু পানি দিয়েই সারতে হয় ইফতার ও সেহরি। তবু কোনো অভিযোগ নেই তার। ভাগ্যের লিখন মেনেই বেঁচে আছেন তিনি।
সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন DBC News বৃদ্ধা সুফিয়ার দুঃখজনক অবস্থা নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর সৌদি আরবপ্রবাসী আব্দুল মতিন মৃধা-এর সহায়তায় ইকরা সুন্নাহ্ ফাউন্ডেশন বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ায়।
“মানুষজন পাশে দাঁড়িয়েছে, এতেই আমি সুখী”
বৃদ্ধা সুফিয়া বিবি বলেন, “পাঁচ সন্তান থাকলেও কেউ আমাকে রাখেনি, তবুও আমি কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে চাই না। আল্লাহ যা লিখে দিয়েছেন, তাই হচ্ছে। ইফতারের সময় কী খাবো, তা জানি না। কখনো শুকনো রুটি পাই, কখনো শুধু পানি খেয়ে থাকতে হয়। কিন্তু আল্লাহর রহমতে মানুষজন আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। ইকরা সুন্নাহ্ ফাউন্ডেশন ও আব্দুল মতিন মৃধার সহযোগিতায় এখন হয়তো একটু ভালোভাবে বাঁচতে পারবো। আমি সবার জন্য দোয়া করি।”
“সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে বদলে যাবে অনেক জীবন”
ইকরা সুন্নাহ্ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল মতিন মৃধা বলেন, “সংবাদটি দেখার পর আমার মন খুব কষ্ট পেয়েছে। একজন মা, যিনি পাঁচ সন্তান জন্ম দিয়েছেন, আজ তিনি একটুখানি খাবারের জন্য কষ্ট পাচ্ছেন—এটা খুবই দুঃখজনক। আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন, তা থেকে এই মায়ের জন্য কিছু করতে পেরে আমি আনন্দিত। ইকরা সুন্নাহ্ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করছি এবং ভবিষ্যতেও করবো ইনশাআল্লাহ। সমাজের অন্যরাও যদি এগিয়ে আসে, তাহলে অনেক অসহায় মানুষের কষ্ট লাঘব হতে পারে।”
এই মানবিক উদ্যোগ বৃদ্ধার দুর্দশা কতটা লাঘব করবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে সমাজের অন্য বিত্তবানরাও যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে অনেক অসহায় মানুষের জীবনে ফিরে আসতে পারে স্বস্তি।