1. admin@uttorbongerkhobor.com : admin :
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
টাঙ্গাইল জেলা জেটেব কমিটি গঠিত: কালিহাতীর বেতডোবায় সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা নওগাঁর বদলগাছি তে নজর কেড়েছে ১২শ কেজি ওজনের কালা মানিক “নিভৃত দীপের আলো” জমির জন্যে নিজ বাবা-মা আর চাচির হাতেই জীবন দিতে হলো নবম শ্রেনীতে পড়া জান্নাতির নওগাঁর নদী দখল ও দূষণে পরিবেশ হুমকির মুখে, সরেজমিনে পরিদর্শনে নদী রক্ষা কমিশন মান্দায় ডাচ্ বাংলা ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং জোতবাজার শাখার আয়োজনে গ্রাহকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গ্রাহক সমাবেশ ও ওঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত নওগাঁ জেলায় এবার ২২ মে থেকে আম সংগ্রহ শুরু হবে রায়পুরায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভা বরানগর ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুব কংগ্রেস কর্মীবৃন্দের পরিচালনায়,‌ রবীন্দ্র জয়ন্তী উৎসব এবং শিল্পী বরণ অনুষ্ঠান। টিকটকার সমাজ
বিজ্ঞপ্তিঃ
সম্মানিত পাঠকগণ, সকলের প্রতি সালাম "আসসালামু আলাইকুম" আপনাদের সহযোগিতা ও ভালোবসায় এগিয়ে যাচ্ছে অনলাইন(প্রিন্ট আবেদনকৃত) ভিত্তিক জনপ্রিয় গণমাধ্যম " উত্তরবঙ্গের খবর" সকল ধরনের সংবাদ সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

নওগাঁয় রঘুনাথ জিউ মন্দিরে রাম নবমী পূজায় ভক্তদের ঢল

  • প্রকাশকাল: রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর মান্দায় পাঁচশ’ বছরের পুরনো ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক ঠাকুর মান্দা শ্রী শ্রী রঘুনাথ জিউ মন্দিরে রাম নবমী পূজা উপলক্ষে ঢল নেমেছিল হাজারো ভক্তের।

কীর্তন, প্রসাদ বিতরণ, ভক্তদের পুজো অর্চনা, ভোগ নিবেদন ও মানত দেওয়ার মধ্য দিয়ে উৎসব মুখর হয়ে উঠে এর চারপাশ।

রামভক্তদের মিলনমেলায় পরিণত হয় মন্দির প্রাঙ্গণ। আত্রাই নদীর অন্যতম শাখা শিব নদী ও বিল মান্দার পশ্চিম তীরে অবস্থান এই মন্দিরটি । নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং নওগাঁ জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত । প্রায় পাঁচশ’ বছরের ঐতিহ্য বহন করে আসছে মন্দিরটি।

রাম নবমী উপলক্ষে চৈত্র মাসে রামের জন্ম তৃতীয়া শুক্লা তিথিতে আজ (৬ এপ্রিল) রোববার ভোরে মন্দিরে ভগবান শ্রী রাম চন্দ্রের বিগ্রহে পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু হয়। এরপর তীর্থ যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। নয় দিনব্যাপী চলবে এই অনুষ্ঠান।

এছাড়াও রামনবমী উৎসবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পুণ্যার্থীরা আসেন ঠাকুর দর্শন ও মানত করতে এতে এবারে সেই তুলোনায় কম ।  তবে ভারোত থেকে এই রাম নবমীতে অনেক দর্শনার্থী আসতো তবে এবার সেই তুলোনায় ভারতের দর্শনার্থী নেই । দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেশকিছু দর্শনার্থী এসেছেন এই মন্দিরে। আগত ভক্ত দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন এ মন্দিরের আশপাশের অন্তত এক কিলোমিটার এলাকা।

এ উৎসবকে ঘিরে মন্দিরের পাশে আয়োজন করা হয়েছে গ্রামীণ মেলার।  প্রথম দিনে নানা ধর্মের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। স্থানীয় হেন্দু প্রবিন বৃদ্ধারা জানান, ‘রাজখাড়া’ জমিদারি স্টেটের কাচারি বাড়ির ভগ্নাবশেষ এখনও কালের সাক্ষী হয়ে আছে রঘুনাথ মন্দিরের পাশে। কথিত আছে জনপদটিতে বাস করতেন দরিদ্র এক অন্ধ ব্রাহ্মণ। তিনি রামভক্ত ছিলেন। বিলে স্নান করতে নামলে রাম, লক্ষণ, সীতা ও হনুমানের কাঠের বিগ্রহগুলো ভাসতে ভাসতে তার শরীর স্পর্শ করে। তিনি প্রণাম করে মূর্তিগুলো নিয়ে বাড়ি ফিরেন। পরে সেগুলো বাড়িতে স্থাপন করে পূজা-অর্চনা শুরু করেন। পুজাকালে একদিন হঠাৎ করেই দৃষ্টি শক্তি ফিরে পান। তার সংসারে সচ্ছলতাও ফিরে আসে। তখন থেকেই এই রঘুনাথ বিগ্রহের অলৌকিকত্বের কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বাড়তে থাকে ভক্তদের ভিড় ।

এক পর্যায়ে কথাগুলো পৌঁছে যায় নাটোরের জমিদার রানী ভবানীর কানে। মন্দির দর্শনে এসে এর জীর্ণতা দেখে নিজেই মন্দির তৈরি করে দেন। সেই প্রাচীনকাল থেকে আজও মন্দিরটির এই অলৌকিকত্বে বিশ্বাস করেন হিন্দু তথা অন্যান্য সম্প্রদায়ের অনেকেই।

এই বিশ্বাসে রামনবমী পূজার দিনে জন্মান্ধ শিশুদের আনা হয় এখানে । এই মন্দিরটি সতেরোশ’ ত্রিশ সালের দিকে নির্মিত করা হয়। পাল আমলের বিভিন্ন প্রত্ন নিদর্শন এই জনপদ থেকে আবিষ্কৃত হয়। এই জনপদটিতে হিন্দু তীর্থের প্রাচীন রঘুনাথ জিউ মন্দির হিসেবে পরিচিত ।

হিন্দু  সম্প্রদায় ছাড়াও অন্য সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ তাদের দৃষ্টি-প্রতিবন্ধীসহ নানান রোগের আক্রান্ত সন্তানদের নিয়ে আসেন এই মন্দিরে। ছোট্ট শিশু থেকে নানা বয়সের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও নানান রোগের আক্রান্তদের সারা দিন রেখে দেয়া হয় মন্দির প্রাঙ্গণে একটি নির্ধারিত স্থানে । পুণ্যার্থীরা একসময় মন্দিরের চারপাশের বিল ও শিব নদীতে গঙ্গাস্নান করে ভেজা কাপড়ে বিল থেকে পদ্মপাতা তুলে মাথায় দিয়ে মন্দিরে যেত ঠাকুর দর্শন করতে।

ভক্তরা আজো সেই রীতি-নীতি মানতে চান। কেউ কেউ আবার দুর্লভ পদ্মপাতা সংগ্রহ করে তা মাথায় দিয়ে তার ওপর মাটির পাতিল বোঝাই ভোগের মিষ্টান্ন মাথায় নিয়ে দীর্ঘ লাইন ধরে প্রভুর চরণে নিবেদন করেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমনকি ভারত থেকেও আসেন হিন্দু পুণ্যার্থীরা । ভক্তবৃন্দের ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে রাতে পদাবলী কীর্তনেরও আসর বসানো হয়। মন্দিরটিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রাম নবমীর উৎসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের সার্বজনীন উৎসব হয়ে উঠেছে। এ উপলক্ষে মন্দিরটিকে ঘিরে জুড়ে বসেছে গ্রামীণ মেলা ।

নওগাঁ থেকে মন্দিরে এসেছেনএক ভক্ত । তিনি বলেন, মনোবাসনা পূরণ করার জন্যই মনে বিশ্বাস নিয়ে মানত করেছি। এখানে মানত করলে ঠাকুর তা পূরণ করেন। স্বামী, সংসার ও সন্তান, বাবা-মাসহ সকলে যেন সুস্থ ও ভালো থাকে।  দীর্ঘ ৬ বছর দাম্পত্য জীবনে কোনো সন্তান নেই। মা হওয়ার আশায় বিভিন্ন চিকিৎসা করেও কোনো সন্তান হয়নি। এক বুক আশা নিয়ে সেই ভোর থেকে শাড়ির আচল বিছিয়ে শ্রী শ্রী রঘুনাথ জিউ মন্দিরের সামনে অপেক্ষা করছেন আগের ভক্ত । তিনি রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট থেকে শনিবার বিকেলে স্বামীকে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রঘুনাথ ঠাকুর দয়া করে যদি আমার কোল আলোকিত করে এই আশায় মানত করতে এসেছি।  প্রায় ১০ জন নারী সন্তানের আসায় শাড়ির আচল পেতে রঘুনাথ ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করছেন।

এ বিষয়ে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সত্যেন্দ্রনাথ প্রামানিক বলেন, রোববার ভোরে পূজা-অর্চনার পর মন্দিরের প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়া হয়। এরপর ভক্ত, দর্শনার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করেন। দুপুরে অন্নভোগ ছাড়াও ভক্তদের জন্য দিনভর পদাবলী কীর্তন ও রামের ভজন সঙ্গীতের আয়োজন করা হয়েছে মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে।

মান্দা থানার ওসি মনছুর  রহমান জানান, পূজা শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল ভাবে পালন করতে প্রশাসনিক ভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রাখা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এরকম আরো সংবাদ পড়ুন
© Developed by Borendro IT
Theme Customized By BreakingNews